ব্রীচ ডেলিভারি

ব্রীচ ডেলিভারি
::রবিউল করিম::

অশনি সকাল শুরু হল কাল
সাড়ে নয়টায় জেগে;
ছুটে ডিউটিতে দশটায় যেতে
ম্যাডাম উঠিল রেগে।

কাচুমাচু স্বরে সরি সরি করে
ব্যাগ রেখে বিছানাতে;
হ্যান্ড ওভারের খাতা হাতে ঢের
লিখিলাম কোন মতে।

মায়ের উদরে স্টেথো ঘুরেফিরে
হার্ট রেট দেখে কয়;
হাতে গ্লাভস পরে বলে পিভি করে
লেখ ছয়, লেখ নয়!

এমনি করিয়া রাউন্ড সারিয়া
ডক্টরস রুমে এসে;
ছুটির কাগজে লিখি ভাঁজে ভাঁজে
বিছানার পাশে বসে।

দেওয়ালের পানে দেখে বামে ডানে
ওষুধ খুজিয়া লিখি;
হঠাতই থামা, খালা বলে মামা,
একটু আসেন দেখি!

তাড়াহুড়া করে গ্লাভস পরেটরে
দেখিলাম চেয়ে হায়!
কপালের ফের! নব্জাতকের
পা দু'খানি দেখা যায়।

ব্রীচ ডেলিভারি-কীভাবে যে করি
মনে করা ভারি দায়!
পা দু'খানি ধরে উঁচু করে করে
টানিলাম বাছাটায়।

একখানি বাহু শনির রাহু
ভিতরে; বাহিরে খুন!
সাথে আছে তার মাথাখানি আর
কাঁধের কিনারা টুকুন।

টানাটানি কত চলে অবিরত
বের হল নারে বাছা!
সিনিয়র এসে হাত দিল শেষে
এবারের তরে বাঁচা।

হাতে দক্ষতা থাকে যদি যথা
বাঁধার পাহাড়ও টলে;
সফলতা চাই? কাজ করো ভাই
অভিজ্ঞতার বলে।

অবশেষে বাছা, অতিশয় কাঁচা
আসিল ধরার বুকে;
কাঁদিলনা কেন এই ভেবে যেন
কথা নাই কারো মুখে।

আম্বো হাতে দ্রুততার সাথে
সিপিআর দেওয়া শেষে,
শিশু বিভাগে দিনু আগেভাগে
কচিকাঁচাদের দেশে।