পরীক্ষা !!!


পরীক্ষা !!!
::রবিউল করিম::

লাইফটা একদম ডাল!
কুমির এনেছি কাটিয়া খাল।
চিকিৎসা বিদ্যার একী হাল?
পড়ার চাপে টালমাটাল !

আজ পড়বনা, পড়ব কাল
এই করিয়াই পুড়ল ভাল।
হঠাৎ শুনি এক বিকাল
পরীক্ষাটা কাল সকাল!

প্রশ্ন দেখেই মাথা টাল
স্যারকে কষে দিলাম গাল।
ভিক্ষাবৃত্তি বানিয়ে ঢাল
লিখনু যাহা সব ভেজাল।

এইভাবে আর কতকাল?
পণ করিলাম 'শুরু' কাল!
কিন্তু গত পাঁচটি সাল
চলছে আমার একই তাল।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'সোনার তরী' কবিতার প্যারোডি

কী আর করি
::রবিউল করিম::

জীবনে জমেছে মেঘ ঘন হতাশা।
বই খুলে বসে আছি নাহি ভরসা।
রাশি রাশি প্যারা প্যারা
পড়ালেখা হল সারা
মার্কশীটে তবু খরা
পাশ দুরাশা
পড়িতে পড়িতে চুল হল ফরসা।।

একখানি ছোট বেঞ্চ, আমি একেলা।।
চারিদিকে বাঁকা চোখ করে ঝামেলা।।
ব্ল্যাক বোর্ডে দেখি লেখা
খাতা যেন থাকে ঢাকা
নাহি যেন যায় দেখা
নকল বেলা।
এপারেতে ছোট বেঞ্চ, আমি একেলা।।

গলা খেঁকে হেটে হেটে স্যার আসে বারে।
দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে।
ভরা গালে চলে যায়
কোন দিকে নাহি চায়
কলমেরা নিরুপায়
থামে দু'বারে।
দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে।

ওগো স্যার বলে যান একটু হেসে।।
খানেক আটকে গেছি উত্তরে এসে।।
যান যেথা যেতে চান
যারে খুশি বলে যান
এদিকে এসে।
আমার খাতাটি ফাঁকা রয়ে যায় শেষে।

যত পারো তত লেখো খাতার ওপরে।।
আর আছে- আর নাই দিয়েছি ভরে।।
এতক্ষণ খাতা খুলে
পড়াগুলি ছিনু ভুলে
সকলি দিলাম তুলে
কপি পেস্ট করে।
এখন পাশ করাও করুণা করে।

লাভ নাই, লাভ নাই, দেখাদেখি করি।।
বানিয়ে ছানিয়ে খাতা রেখেছো ভরি।।
মনের গগন ঘিরে
ভয় ডর ঘুরে ফিরে
ফেল মারাদের ভিড়ে
রহিনু পড়ি
পাশ আর হল নারে! কী আর করি!


অনুরোধে ডিউটি গেলা

অনুরোধে ডিউটি গেলা
::রবিউল করিম::

বলিতে পারিনা 'না'
থাক শত যন্ত্রণা
ডিউটি করার আবদারে;
তাইতো এখন আমি আছি ১০ নাম্বারে!

শিশু রোগী সব
করে কলরব
সারারাত করে শুধুই কান্নাকাটি
এক করিব কী নয়নের দুই পাটি!

মর্নিং করে 
ইভিনিং সেরে
আবারও নাইট ডিউটিটা রিকোয়েস্টে,
আজ সারাদিন থাকা হবে না কি রেস্টে?

চোখে নামে নিদ
মনে এলো জিদ
যাই হোক হবে রাত্রে,
ঘুমের সাগর পাড়ি দেব আজ সাঁতরে!

দরজা লাগিয়ে
বিছানা বাগিয়ে
ডাক্তারদের রুমে,
বিভোর হলাম সে যে কী গভীর ঘুমে!



ঘুম নচ্ছাড় !
বাজে পোনে চার!
সেহরির আর দশটা মিনিট বাকি!
হায় হায় আজ কী খেয়ে রোজাটা রাখি?

হাতমুখ ধুয়ে
কোনমতে গিয়ে
বসিলাম শেষে ডক্টরস ক্যান্টিনে,
রেজাউল দিল গরু আর ভাত এনে।

গোগ্রাসে গিলে
চমকিল পিলে
লেবুতে সে যে কী কটু স্বাদ?
তেলাপোকা যেন মারিয়াছে তাতে পাদ !

ওয়াক ওয়াক ! ওরে
কী খাওয়ালি মোরে ?
একমুঠি ভাত কোনমতে তাই গিলে,
সাইরেন শুনে শেল বিঁধেছিল দিলে।

অনুরোধে ঢেঁকি
গিলবোনা দেখি
আগামী ক'মাস আর;
নিজের ডিউটি নিজে করে হব পার !


রোজ হাশর

রোজ হাশর
::রবিউল করিম::
কবিতাটি ফেসবুক পেজ অণুকাব্য থেকে নেওয়া

নতুন বারতা ভাঙ্গে নীরবতা
ইসরাফিলের বীণে।
কবর ফাটিয়া দাঁড়ায় উঠিয়া
মুর্দায় মিসকিনে।

যে ছিল যেমন উঠিল তেমন
নগ্ন উদোম গা।
কেহ কভু কারে দেখিতে না পারে
সজোরে চলিল পা।

হাঁকে ফেরেশতা, সিধা সে রাস্তা
হাশরের পানে ধায়;
প্রবলের ভয়ে প্রাণ হাতে লয়ে
সকলে ছুটিয়া যায়।

মাথার উপরে আধ হাত পরে
লেলিহান রবি জ্বলে;
মাটি পুড়ে তামা, তবু নয় থামা
মুর্দা সকলে চলে।

মগজ ফোটে রে টগবগ করে
শরীর জ্বলিয়া যায়,
ঘামের সাগরে হাবুডুবু করে
পাপী তাপী আজি হায়!


রহমান আজি ক্বহহার সাজি
বজ্র নিনাদ স্বরে,
'চোপরাও সবে, বিচার হবে'
দিলেন ঘোষণা করে।

তবু তারপর হাজার বছর
এমনি কাটিয়া যায়;
পুড়িয়া গরমে নাহিয়া ঘরমে
পরাণ ফাটিছে হায়!

আরজ করে সেজদায় পড়ে
খোদার আরশ পানে,
হয় হোক নার তবুও বিচার
করগো; বাঁচাও প্রাণে।

আঁধারে আলো

আঁধারে আলো
::রবিউল করিম::

চারিদিকে শুধু শুনি খাই খাই কেহ নাহি কারে সাধে
কত লাখ কোটি ক্ষুধার জ্বালায় উদরে পাথর বাঁধে।
কত কংকালসার শিশুর বুকের খাঁচায় সাক্ষী দেয়
গরীবের হক মারিয়া জালিম স্বর্গের স্বাদ নেয়।
এভারেস্ট সম টাকার পাহাড় গড়িয়া সুখের ঘোরে
বৃথা অপচয় মিছে টাকা ক্ষয় করিছে ধনের জোরে।
খেয়ে না খেয়ে ভিখেরি কত ধুঁকে ধুঁকে মরে হায়
এসব দেখিয়া কারই বা হৃদয় খানিক কাঁপিয়া যায়?
এত জুলুমের শিকড় কাটিতে আসিল ধরার বুকে
ইসলাম রবি সাম্যের ছবি আঁকিল বিভেদ চুকে।

জন্মিল শত আবুবকর আর উমর, গনি, আলী
অন্যরে সুখে রাখিতে লাগালো নিজের জামায় তালি।
রাতের আঁধারে খুঁজিত দুঃখীর কান্নাকাটির হেতু
দুঃখ ঘোঁচায়ে অভাব সায়রে গড়িত সুখের সেতু।
আবারও সেসব দেবদূত কবে আসিবে মানুষ রূপে
চিরদুঃখীজন দেখিবে তখন আলো আঁধারের কূপে।
এমন সময় আসিবে সেদিন মজলুমানের হাত
জালিমের হাত চাপিয়া ধরিবে, বাঁচিবে গরীব জাত।

কোটাঃ দিন বদল হবেই

কোটাঃ দিন বদল হবেই
::রবিউল করিম::

আমার সোনার বাংলাদেশে
অশুভ রাণীর করাল গ্রাসে
বিরোধী সকল প্রবল ত্রাসে
দিন গুনিছে বসে।

কোটার বিলোপ করতে এসে
ফকিরের পুত গাল খেল সে
সরকারী দল মারল শেষে
লাঠির আঘাত কষে।

দমন পীড়ন মুদ্রাদোষে
দুষ্ট রাণী; রুষ্ট দশে,
ভিমরি খেয়ে অবশেষে
আঙ্গুল চোষে বসে।

অপশাসন রুখতে হেসে
জান দিবি কে লড়তে এসে!
বীর সেনানী বজ্র বেশে
আঘাত হানো কষে।

দেখবি তবে যুদ্ধ শেষে
মরবে জালিম; পড়বে ধসে
জুলুম রাঙা ব্যবস্থা সে।
বদলাবে দিন শেষে...

অণুকাব্য র সাথে থাকুন, পেজটিতে লাইক দিন,
কবিতা ভালো লাগলে শেয়ার করুন,
নিজে পড়ুন অন্যকেও পড়তে দিন...

জীবন যুদ্ধ: ডাক্তার

জীবন যুদ্ধ: ডাক্তার
::রবিউল করিম::

আজকের দিন যেন অমলিন
হৃদয়ের মণিকোঠায়।
আশার ভেলা- হার জিৎ খেলা;
জীবনের হতাশায়!

জান প্রাণ খেটে ছ'বছরে মোটে
এমবিবিএস পাশ।
ছোট ডাক্তার! ওরে কত আর?
বাড়িছে দীর্ঘশ্বাস।

ইন্টার্নশিপ শেষ হলে বেশ
বেজায় বেকার জীবন।
এফসিপিএস বিসিএস
ছাড়া বড় হয়েছিল ক'জন?

পেটের দায়ে গতরে গায়ে
খাটিতে হইবে খ্যাপে,
পাঠাগারে বসে পড়া লাগে কষে
এরই মাঝে গ্যাপে গ্যাপে।

তবে যদি হয় পাশ দুর্জয়
পার্ট ওয়ান কোনমতে।
চার বছরের ট্রেনিংয়ের ফের
বাঁশেরকেল্লা ফতে।

দ্বার দ্বার ঘুরে হাতে পায়ে ধরে
ট্রেনিংয়ের পোস্ট পেয়ে;
ডাক্তার সাবে ভাবে ও অভাবে
বাঁচিল খেয়ে না খেয়ে।

দেখো! রোগী সাধে, ঘরে বউ কাঁদে
সময়ের বড় আকাল।
তাহার উপরে পড়িবার তরে
পাঠাগারে কাটে বিকাল।

বছরের পর ঘুরিছে বছর
পড়িয়া চলিছে হায়,
ফেলের উপর ফেলের বহর
পাশ নাহি আর পায়।

অবশেষে পাশ তবু গলে ফাঁস
প্রমোশন কবে হয়?
সিনিয়রিটি নাই তবু ঘুঁটি
চালাচালি করে কতিপয়।

শেষমেশ যবে পাকা চুল হবে
পদোন্নতি হবে তার;
রোগী দেখে পাকা পাঁচ শত টাকা
চাইলে কসাই ডাক্তার।

Come again...Get more...Like অণুকাব্য

কোটাণুকাব্য

কোটাণুকাব্য
::রবিউল করিম::

শতের ভিতর ছাপ্পান্নটা থাকল যদি কোটা
লেখাপড়া করে টেকে কোন সে মামুর বোটা...
কোটায় কোটায় দেশটা খেল দুধের মাছির দল
যখন তখন চাকরি পাবে খাটিয়ে কোটার বল।

আশির বেশি মার্ক উঠালেও কোটার করাল গ্রাসে
মুখের খাবার 'সোনার হরিণ' খাচ্ছে গোগ্রাসে।
সারাজীবন পড়েটড়ে বিসিএসে এসে,
কোটাবাজীর কালো হাতে চড়টি মারে কষে।

কোটার বিলোপ প্রাণের দাবি উঠায় জনে জনে;
কর্তা যারা তাদের কেউই তুলছে না তা কানে।
ওদের কানে বড়শী দিয়ে টানলে হবে কাজ
বড়শী হাতে পথে পথে নামরে সবে আজ...

সেকেন্ডারী পিপিএইচঃ শিউলী

সেকেন্ডারী পিপিএইচঃ শিউলী
::রবিউল করিম::

সেদিন রাতে কোরান হাতে
বসিয়াছি সবে পড়িতে।
কেন ক্ষণে ক্ষণে পড়িতেছে মনে
রোগিণীর বিপি কততে?

ভাবিলাম তাই ক্ষণ পরে যাই,
ফলোআপ তারে দিতে হয়…
এক লোক এসে বলিল যা শেষে
বুঝিলাম রোগী ভালো নয়।

রক্তের বান কাড়ে যেন প্রাণ
শোকের আঁধার নামে,
সে গোবেচারা মুখে কথাহারা
অসহায় ধরা ধামে!

বিপি ছিল শেষে দশটা বিশে
একশত বাই পঞ্চাশে!
ত্বরা করে তাই ছুটে গেনু ভাই
অভাগী মায়ের পাশে।

একমাস গেছে সিজার হয়েছে
পনের দিনের দিন।
খুনের দরিয়া কেমন করিয়া
হল যেন বাঁধ হীন।

তাহারও পরে এটা সেটা করে
১০ দিন করে পার
সেই আসিলে হাসপাতালে
পারে নাই যবে আর!

পালস দুর্বল; বিপি করে ফল
রোগিণী গিয়েছে শকে।
পঞ্চাশ বাই ত্রিশ মেপে পাই
এত রাতে ডাকি কাকে?

ব্যাগ তিন চার রক্ত আবার
ডিমান্ড লিখিয়া দিয়ে।
ওষুধ পাতি তাড়াতাড়ি অতি
ম্যানেজ করিনু গিয়ে।

আরেক রোগীরে রিকোয়েস্ট করে
একটি ক্যানুলা নিয়ে,
পুর ফান্ড হতে হার্টসল হাতে
চালিয়ে দিলাম গায়ে।

দুই দুইখানি ট্র্যাক্সিল আনি
দিয়ে দিনু সব ভেনে।
মেথারস্পানের একখানি ফের
মাসলে দিলাম এনে।

এই সেই করে ধীরে ধীরে পরে
নরমাল হল বিপি।
এবারের তরে লহুর আকরে
লাগিয়াছে যেন ছিপি।

এমনি করিয়া রাত্রি গড়িয়া
ফুটিল ভোরের আলো।
শিউলি ফুলে প্রাণ যেন মেলে
ঘুচিল আঁধার কালো...

রমজাণুকাব্য

রমজাণুকাব্য
::রবিউল করিম::

রমজান-
জানপ্রাণ
কোরবান,
পড় বেশী কুরআন।

রমজান-
ছেড়ে গান,
সুখটান,
ভাল কাজ করে যান।

রমজান-
ভুলে যান
অভিমান,
ভাই ভাই হয়ে যান।

রমজান-
প্রতিদান,
সম্মান
দিবে খোদা রহমান।

রমজান-
কম খান !
ভেবে খান !
মার্কেটে কম যান !

শালীনতা

শালীনতা
::রবিউল করিম::

আজি হৃদয়ের ঘরে বাজে ঘুরেফিরে
শুনশান নীরবতা।
শোনে মনের গহীনে মেধা ও মননে
বেদনার কথকতা।

তার প্রাণের আবেগে হৃদয়ের বাগে
কুসুমকলিরা ফোটে।
তবু বিধাতার ভয়ে শালীনতা লয়ে
সুবোধেরা সব ছোটে।

আজি প্রাণের আবেগ মিছে ভাবাবেগ
রুধিতে যদিরে নারি।
মোর তনুমনে হবে ক্ষণে ক্ষণে
গুনাহর ফোয়ারা জারি।

যদি সৎ হতে তবে সতী পেতে;
জীবনের যত গ্লানি,
বেদনা, যাতনা কভু আসিতনা;
বাড়িতনা প্রাণহানি।।

ফাইব্রয়েড ইউটেরাসঃ মরিয়ম

ফাইব্রয়েড ইউটেরাসঃ মরিয়ম
::রবিউল করিম::

ধুম ধাম করে বিবাহের পরে
আসিয়া স্বামীর ঘরে
কপালের লেখা ধীরে ধীরে দেখা
আরম্ভ হইল পরে।

বছরের পর আসিল বছর
ভাগ্যের চাকাখানি
ঘুরিলনা তার; বাড়ে হাহাকার
জীবনে আসিল গ্লানি।

এতদিন গেল বিবাহ হল
বাচ্চা আসেনি পেটে !
যাও একখানি এসেছিল জানি
রহে নাই বহু খেটে।

গোদের উপর যেন বিষফোঁড়
বছর ছয়েক বাদে;
কী জানি ব্যাথায় যেন অভাগায়
পড়িল গহীন খাদে।

অস্ত্রোপচার হল একবার
দু হাজার নয় সালে;
মায়োমেকটমি সাথে ডিম খনি
ওভারির সিস্ট গেলে।

বছর তিনেক কাটিল অনেক
সুখ দুঃখ করে পার;
পেটের ব্যাথার চোটে সে আবার
ঘর থেকে হল বার।

দু হাজার তের-ওটি ঘরে ফেরও
আসিল দুঃখের রাণী !
ফ্যানেন্সটিয়েল দিয়ে সে ঘায়েল
সিস্ট এলো দুইখানি।

মাস তিন ধরে কাতরিয়ে পরে
বছরের মাঝখানে
তীব্র ব্যাথা; মুখে নাই কথা
পরিবার পরিজনে।

অবশেষে ফের হাসপাতালের
ওটি ঘরে শুয়ে আজ
জরায়ু হারালো; মাথায় পরিল
বন্ধ্যা নারীর তাজ !

তাহার জীবনে মধ্য গগনে
জ্বলজ্বল করে রবি।
তবু যেন সাঁঝ নামিল যে আজ
প্রাণহীন লাগে সবই।

এডমিশন নাইটঃ তাহমিনা

এডমিশন নাইটঃ তাহমিনা
::রবিউল করিম::

সে যে কী ভীষণ ছিল বিভীষণ
গতকালকের রাত!
নয়নদুটি পায়নিকো ছুটি
হতে পারিনিকো কাত।

এক এক করে সিরিয়াল ধরে
এলো সে কী সব রোগী !
প্রসব ব্যাথায় যেন মৃতপ্রায়
লহুর ভুক্ত ভোগী।

সিস্টোলে মোটে ত্রিশ কোনমতে
মাপিয়া দেখিনু তার।
হাত ধরে দ্রুত পালস পাই শত
পঞ্চাশ আরও পার !

ত্বরা করে তাই দিনু তারে ভাই
রিঞ্জার্স ল্যাকটেট।
অতঃপর গুনে দেখি ক্ষণে ক্ষণে
রেডিয়াল পালস রেট।

আজিকে সকাল যেন মহাকাল
থামিল তাহার জীবনে।
রক্তের লাগি মোরা কাঁহামাগি,
হাতছানি দেয় মরণে।

সিজারের ত্বরে নিয়ে ওটি ঘরে
সনোগ্রাম করে ফের,
জরায়ুর মাঝে সেদিনের সাঁঝে
মরণ হয়েছে বের।

অভাগীরে তাই ফেরত পাঠাই
বলে কয়ে পরিবারে।
কাটাছেঁড়া ফেলে নরম্যালি হলে
ভালো হবে শোন বা রেঃ।

ডেলিভারী শেষে ফুল নাহি আসে
মেজাজ হইল রুঢ় !
করে ম্যানুয়াল হল রিমুভাল
ফুল খানি এত বড় !

এমনিতে মড়া তার উপরে খাঁড়া
জন্ডিস আছে তার,
প্রসবের পরে লহুর আকরে
বান ডাকে বারেবার।

পরিজন যত কাঁদে অবিরত
নুন যেন লাগে ক্ষতে।
রক্তের বানে প্রাণহীন প্রাণে
টিকে আছে কোন মতে।

অবশেষে তারে ট্রান্সফার করে
মেডিসিনে করে পার।
নির্ঘুম বসে ভাবিলাম শেষে
কত আর ! কত আর !

বেচারির নাম তাহমিনা।
জানিনা বেঁচে আছে কী না

সেমিনারে অণুকাব্য

সেমিনারে অণুকাব্য
::রবিউল করিম::

সেমিনারে গিয়ে মনোযোগ দিয়ে
লেকচার শুনে পরে।
ঘোষক ডাকিল সময় আসিল
অণুকাব্যের তরে।

লেখা সেতো সোজা, বলা ভারি বোঝা
মজলিস ভরা মানুষে।
গলা টলা কাঁপে, গরম ভাপে
কান ছাড়ে ধোঁয়া বাতাসে।

আমি যে অধম বুকে নাই দম
আবৃতি করা ভার।
কোনমতে পড়ি ! হেঁসে গড়াগড়ি !
ভয় নাই যেন আর!

যুঝে শেষমেশ পড়া হল শেষ
বাঁচিলাম হাঁফ ছাড়ি !
সাত সমুদ্র ভাষা দরিদ্র
আমি দিনু যেন পাড়ি...

নান কিং দরবার হলে স্কয়ার এর সায়েন্টিফিক সেমিনার
২০.০৬.২০১৩