নির্বাচণুকাব্য

নির্বাচণুকাব্য
::রবিউল করিম::

জনতার রায় মেনে নেওয়া দায়
যেন সে গলার কাঁটা !
কর্মের দোষ, বৃথা ফোঁস ফোঁস-
'এ জাতি কপাল ফাটা' ।

চেতনার ফেরী আর নয় দেরি
অচেতন হতে ব্যালটে,
তবু ভয় হয়! জিতে পরাজয়
দেয় কী জবাব বুলেটে?


চেতনা! চেতনা! এত যে যাতনা !
ডানে গেলে যত দোষ!
বামের গ্রাসে, বাবুয়ানা ত্রাসে
সংখ্যাগুরুর রোষ।

ফলাফল হল, ডানে জিতে গেল;
সে কী আফসোস বামের !
শনির দশা ভেঙে ফেলে খাসা
জয় হল ইসলামের...

ফরসেপস ডেলিভারী

ফরসেপস ডেলিভারী
::রবিউল করিম::

বড় আশা করে তিন মেয়ে পরে
দেখিতে বেটার মুখ,
অনেক বয়সে ঝুঁকি নিল শেষে
ঘোঁচাতে কপাল দুঃখ।

এছাড়াও দুটি বাছা গুটি গুটি
ছ'মাসের পরে আর
থাকে নাই পেটে, চোখ দুটো ফেটে
অশ্রু গড়েছে তার।

ছয় নম্বরে এসে দম ধরে
চাপ দিয়ে দিয়ে হায়!
ঘেমে নেয়ে যায় অশ্রু গড়ায়
অধরের কোণাটায়।


অবশেষে এক ঘণ্টা খানেক
বাদে এসে সিনিয়র,
ফরসেপস হাতে নিয়ে সাথে সাথে
বলিলেন ওঁকে ধর।

মাথাখানি ধরে জোরাজুরি করে
টানাটানি হল যত;
ব্যাথার চোটে চারিদিকে ছোটে
কান্নার ঢেউ তত।

ধমকের সুরে বলা হল তারে
কেঁদেকেটে কেন মরো ?
নবজাতকের ক্ষতি হবে ফের
নড়াচড়া যদি করো।

অনেক কোশেশ করে শেষমেষ
বাহিরে আসিল মাথা।
পৃথিবীর আলো যেন সে দেখিল
কমিল মায়ের ব্যাথা।

কাঁদিল না সে তো তদবির কত
করা হল তারে নিয়ে;
রঙিন স্বপন বাদে ক্ষণেক্ষণ
ফিঁকে হয়ে থাকে জিয়ে।

সেদিনের কথা কেমনে যে ব্যথা
ভুলিব আপন মনে?
হৃদয়ের ক্ষত জ্বলে অবিরত,
বাঁচে নারে বুঝি ধনে !

আঁতুড় ঘর

আঁতুড় ঘর
::রবিউল করিম::

বারোটি ঋতুর জীবনে আঁতুড়
ঘরে প্রসূতিরা আসে;
সোয়া নয় মাস ক্লেশে করে বাস
কেহ কাঁদে, কেহ হাসে।

প্রাণের যাদুরে বহিয়া উদরে
রুধীরে বাঁধিয়া রাখি,
আহা গোবেচারী দুঃখ সাঁতারি
বাঁধিল সুখের রাখী।


হাঁসিল ভূবন শুভ দিনক্ষণ
কাঁদিল যাদুটি যবে,
খুশী পরিজন, পর কী আপন;
বরিল সকলি ভবে।

প্রতিদিন যত শিশু আসে শত
হাজার লক্ষ প্রাণ...
আঁতুড় ঘরেই শুরু হয় সেই
জীবনের জয়গান...

রাপচার্ড ইউটেরাস

রাপচার্ড ইউটেরাস
::রবিউল করিম::

কপালের ভাঁজ পড়িল যে আজ
সিনিয়রদের মুখে।
চাঁদের আলো যেন ঢেকে গেল
কী জানি বেজায় দুখে।

এসেছে রোগী যেন অভাগী
বেঁচে আছে কোন মতে।
হাতুড়ের মতি করিয়াছে ক্ষতি
সুঁই ফুটিয়েছে গা তে।

প্রসবের ব্যাথা ওঠে নাই যথা
অক্সিটোসিন কভু নয়!
ফুল ডাইলেট হলে ঝটপট
ড্রিপের কথাটি ভাবা হয়।

কিন্তু কোয়াক ডাক্তার এক
অভাগীরে দিল উহা;
ফ্যাকাসে রোগী ভুক্তভোগী
দুচোখে আঁধার গুহা।


তাহার উদরে হাত রেখে ধীরে
ম্যাডাম চমকে কয়;
জরায়ুর দশা একী বেদিশা
রাপচার মনে হয়!

ত্বরা করে তারে নিয়ে ওটি ঘরে
টেবিলে করিয়া কাত;
রক্তের লাগি রহিল বিবাগী
ডাক্তার সারা রাত।

অবশেষে লহু আসিল সে বহু
তদবির করে করে;
বড় ডাক্তারে কাটিল তাহারে
আমি রই সুতা ধরে...

পেটের ভিতরে দেখি আহারে
যেন রক্তের বান।
জরায়ুর দফা হইয়াছে রফা
মরেছে বিধির দান।

খেটেখুটে ঢের সারা হল ফের
সেই সে বাচ্চাদানি;
অভাগী আবার ঘুরালো তাহার
ভাগ্যের চাকাখানি।

আবারও হয়তো এবারের মতো
বিপদে পড়িয়া শেষে;
সাথে গৃহস্ত হবে দ্বারস্থ
হাসপাতালে এসে ...

সরকারি ওটি

সরকারি ওটি
::রবিউল করিম::

আমাদের ওটি এত পরিপাটি !
মাছি উড়ে আসে আগে;
ম্যাগটের ভয়ে হাততালি দিয়ে
সে মাছি তাড়ানো লাগে।

দুঃখ ভীষণ, চলে বিভীষণ
যুদ্ধ, নিডল হোল্ডারে
ধার নেই, সুতা ছেড়ে দেয়,
আর্টারি তাই নট করে।

ওটির এসি রোগে থাকে বেশী
বাতাসে বেজায় গরম।
ফ্যানের হাওয়ায় চুল উড়ে হায়
ক্ষতে পড়ে, পাই শরম।

এতকিছু পরে ওটির ঘরে
হররোজ হয় অপারেশান।
ইনফেকশন হলেও ক'জন,
বাকি সব সেরে ফেরত যান।

হিসেবণুকাব্য

হিসেবণুকাব্য
::রবিউল করিম::

ছিলনা স্বপন ছিল এ ভুবন
তোমার জনম পূবে...
রবে সকলের ইতিহাস ফের
মরণ সায়রে ডুবে...

ভেবনাকো শেষ হয়ে যাবে বেশ
বেবাক ইতিহাস
মরণের সাথে; হিসেবের প্রাতেঃ
কষা হবে প্রতি শ্বাস...

এডণুকাব্য

এডণুকাব্য
::পরমাণুকবি রবিউল করিম::

খুব যদি হয় মনে
অণুকাব্যের সনে
জবরদস্ত পেয়ার,
এখনই পেজটি করুন দেখি শেয়ার!!

যদি চান বেশী
লোক পড়ে খুশী
হবে; তো লাগান ফাইট,
কার চেয়ে বেশী কে করে ইনভাইট।

ইনভাইটে নষ্ট সময়?
শত চেক বক্স আর আর টেপা নয়!
এতটুকু এক এক্সটেনশন,
দূর করে দিল সব টেনশন!!

ফেসবুক ফ্রেন্ড ইনভাইটার
১.১ টা শুধু একবার
গুগল ক্রোমে লাগিয়ে নিলেই সকল কেল্লা ফতে,
তাইতো বলি, করুন শুরু এখন কোন মতে...

মাছের ডিম

মাছের ডিম
::রবিউল করিম::

আজ হতে এই বেশিদিন নয়
দশক চারেক আগে,
জিনিসপাতির দাম ছিল যা
শুনে বিস্ময় জাগে।

আট আনায় হতো কামলা রাজী
সারাটি দিনের মনে,
আরো পেত নুন,পেয়াজ,মরিচ
পান্তা ভাতের সনে।

ঘরে ফিরে যদি মেলে নাই মাছ
গরম ভাতের পাতে,
অমনি ছুটিত বিলের পানে
খুঁড়ে জাল নিয়ে হাতে।

একটু খানিক খাটুনি দিলেই
মিনিট দশেক পরে,
পুঁটি,ভ্যাদা আর নন্দই মাছে
খালই আসিত ভরে।

ইলিশ মাছের হালি ছিল মোটে
পোণে দুই থেকে দুই,
একটি টাকায় মিলিত বেজায়
বড় দুইখানি রুই।

সারাটি পাড়ায় জানান দিত সে
ইলিশ মাছের ঘ্রাণ,
এতখানি বড় চাকা দেখে পরে
জুড়াত সবার প্রাণ।

খাবার টেবিলে বসে বসে আজ
সেদিনের কথা ভাবি!
কেউ কেউ বসে করে এক বাটি
মাছের ডিমের দাবি।

এক এক গ্রাসে শেষ হয়ে যায়
লক্ষ মাছের প্রাণ!
আবেদন করি সকলের কাছে,
ভেবে খান! ভেবে খান!

ব্রীচ ডেলিভারি

ব্রীচ ডেলিভারি
::রবিউল করিম::

অশনি সকাল শুরু হল কাল
সাড়ে নয়টায় জেগে;
ছুটে ডিউটিতে দশটায় যেতে
ম্যাডাম উঠিল রেগে।

কাচুমাচু স্বরে সরি সরি করে
ব্যাগ রেখে বিছানাতে;
হ্যান্ড ওভারের খাতা হাতে ঢের
লিখিলাম কোন মতে।

মায়ের উদরে স্টেথো ঘুরেফিরে
হার্ট রেট দেখে কয়;
হাতে গ্লাভস পরে বলে পিভি করে
লেখ ছয়, লেখ নয়!

এমনি করিয়া রাউন্ড সারিয়া
ডক্টরস রুমে এসে;
ছুটির কাগজে লিখি ভাঁজে ভাঁজে
বিছানার পাশে বসে।

দেওয়ালের পানে দেখে বামে ডানে
ওষুধ খুজিয়া লিখি;
হঠাতই থামা, খালা বলে মামা,
একটু আসেন দেখি!

তাড়াহুড়া করে গ্লাভস পরেটরে
দেখিলাম চেয়ে হায়!
কপালের ফের! নব্জাতকের
পা দু'খানি দেখা যায়।

ব্রীচ ডেলিভারি-কীভাবে যে করি
মনে করা ভারি দায়!
পা দু'খানি ধরে উঁচু করে করে
টানিলাম বাছাটায়।

একখানি বাহু শনির রাহু
ভিতরে; বাহিরে খুন!
সাথে আছে তার মাথাখানি আর
কাঁধের কিনারা টুকুন।

টানাটানি কত চলে অবিরত
বের হল নারে বাছা!
সিনিয়র এসে হাত দিল শেষে
এবারের তরে বাঁচা।

হাতে দক্ষতা থাকে যদি যথা
বাঁধার পাহাড়ও টলে;
সফলতা চাই? কাজ করো ভাই
অভিজ্ঞতার বলে।

অবশেষে বাছা, অতিশয় কাঁচা
আসিল ধরার বুকে;
কাঁদিলনা কেন এই ভেবে যেন
কথা নাই কারো মুখে।

আম্বো হাতে দ্রুততার সাথে
সিপিআর দেওয়া শেষে,
শিশু বিভাগে দিনু আগেভাগে
কচিকাঁচাদের দেশে।

কর্ড প্রোল্যাপ্স

কর্ড প্রোল্যাপ্স
রবিউল করিম

ডিউটি সেদিন বিকেলের পালা
রোগী সামলানো ভার।
এরই মাঝে এক গর্ভবতীর
কর্ড নাকি হল বার।

চকিতে উঠিয়া গেনু দৌড়িয়া
ঘটনার মূল দেখিতে।
হাত দিয়া দেখি আর নাই বাকি
কর্ডটি মাথায় ঠেকিতে।

কর্ড বাহিরে, চিকিৎসা যে কী
ভুলিয়া গিয়াছি হায়!
কে যেন বলিল কর্ডটি ভরিয়া
প্যাক দিয়া দেওয়া যায়।

অমনি করিয়া দিলাম রাখিয়া,
কখন আসিবে বড় কেউ
ভাবিতেছি, কানে লাগিতেছে
রোগীর কান্না রোলের ঢেউ।

মিনিট দশেক বাদে সে যে এক
সিনিয়র এসে ভাই,
কী করিবে আর, টেনশন তার
বাড়িয়া চলিল তাই।

ফোনালাপ সেরে ডিসিশন করে
বলিল আমারে, আরে!
কী করো? রোগীরে রেডি করো ধরে
সিজার করিব তারে।

কর্ডে পালস নাহি, মন ত্রাহি ত্রাহি
গর্ভবাসীর প্রাণ
আছে কীনা ভাই, বুঝিতে না পাই
বাঁচে কি বিধির দান।

পেট কেটেকুটে বহু খেটেখুটে
বাহির করিনু রবি!
যেন সে যে চাঁদ, হরিষে বিষাদ
প্রাণ ছাড়া আছে সবি।

বামণুকাব্য ২

বামণুকাব্য ২
::রবিউল করিম::

দেখিবে সুদূর থাকে যদি দূর
দৃষ্টি তোমার নয়নে,
ললাটে সিঁদুর মাখিয়াছে পুর
বামে 'ধর্মের চয়নে'...

ছলাকলা ভরা বাণী মুখে ওরা
সন্দেহ পোঁতে মননে।
কাপড় পরা নগ্ন যে তারা
আগ্রহ বেশী জননে...

কৃষ্টিকলার ভান করিবার
লাগিয়া তাহারা পরনে,
বেজায় সুতির ভারতী ধুতির
গিট্টু, বোশেখ বরণে...

ভিতরে বাহির করেছে জাহির
মানবতাবাদী ধরমে।
মিডিয়াবাজীর খোলস হাজির
অশ্লীলতার চরমে।

সংখ্যাগুরু মুসলিম দুরু
দুরু কাপে বাম জরাতে।
গুটিকতকের বিপরীতে ঢের
মরে ঐক্যের খরাতে।

ডাক্তারণুকাব্য

ডাক্তারণুকাব্য
::রবিউল করিম::

একজন ডাক্তার,
সুখে দুঃখে মানুষের
কাছাকাছি স্থান তাঁর।
ডাক্তার, সে ডাক্তার।

একজন ডাক্তার,
ধ্যানে আর জ্ঞানে থাকে
রোগীদের সেবা যার।
ডাক্তার, ভালো ডাক্তার।

একজন ডাক্তার,
দিনরাত ডিউটিতে
নির্ঘুম রাত পার।
ডাক্তার, নিউ ডাক্তার।

একজন ডাক্তার,
মাসে গড়ে পনের
দিন থাকে খ্যাপ তাঁর।
ডাক্তার, বেকার ডাক্তার।

একজন ডাক্তার,
মাথাটার চুল উঠে
এতবড় টাক তার।
ডাক্তার, বুড়ো ডাক্তার।

একজন ডাক্তার,
ডিগ্রীটা হাতে নিয়ে
প্রমোশন নাই যার।
ডাক্তার, আমডাক্তার।

একজন ডাক্তার,
লেখাপড়া যেন তেন
এক্সামে পাস তার।
ডাক্তার, নেতা ডাক্তার।

একজন ডাক্তার,
দিনরাত হাড়াভাঙ্গা
খেটে ভাতা নাই যার।
ডাক্তার, এইচএমও ডাক্তার।

একজন ডাক্তার,
মেডিকেলে একদিনও
না পড়েও হাঁক তার।
ডাক্তার, ভুয়া ডাক্তার।

একজন ডাক্তার
সারাটি জীবন খেটে
জনসেবা কাজ যার।
ডাক্তার, গুণী ডাক্তার।

একজন ডাক্তার
সারাটি জীবন পড়ে
পাঁচশত ফিস যার।
ডাক্তার, কসাই ডাক্তার।

মিথ্যাণুকাব্য

মিথ্যাণুকাব্য
::রবিউল করিম::

তুমি মহারাণী,
কচলাও বাণী,
মিডিয়া সে গু চাটবেই।
নাহয় কুকুর
তোমার ঘুঘুর
তালা মারা ফাঁদ দেখাবেই।

তোমার পাপে
ছাড়েনিকো বাপে
রহেনি গোপন কিছু তার।
কপালে সিঁদুর
কালো পটি পূর
ধর্ম ব্যবসা কত আর?

সংসদে তুমি
মনের ভূমি
বর্গা দিয়েছ শাহবাগে।
টাকাকড়ি,ফের
বিরিয়ানি ঢের
জনতা জাগার আগে।

মিডিয়ার বাম
ঝরিয়েছে ঘাম
তাহার প্রচার প্রসারে।
জনতার মন
বুঝেছে এখন
কে ছিল তাহার দোসরে।

তোমার গুলি
ছিদিল খুলি
৫মে কত যে আলেমের।
আবারও মিছের
জাল বুনে ফের
বিজয় আনিলে জালেমের।

পাকিলেও চুল
বোঝনিকো ভুল
জিন্দেগী আর ক'দিনের?
মরণ সবার
কাড়িবে আবার
সুখের স্বপন সু দিনের।

গুডবাই পিঙ্কু হোস্টেল...

গুডবাই পিঙ্কু হোস্টেল...
::রবিউল করিম::


পিঙ্কু হলে
তিনশ চারে প্রথম এসেছিলাম
পেশীর বলে
ছিটকে পড়ে তিনশ বাইশ গেলাম।

তার পরে ফের
চারশো এক এ ত্যাগের মহিমায়;
বুঝে শুনে ঢের
ফিরেছিনু পরে তিনশ বাইশটায়।

মাস দেড় দুই
তিনশ আটে শেষ প্রফ টার আগে;
এমন বিভূঁই
সয়নি কপালে; আবারও বাইশে যা গে!

আসিল নতুন!
আবাসন ফের ত্যাগের সংকটে;
চিরপুরাতন
তিনশত চার আবারও জুটিল বটে।

৬ টি বছর শেষে
হাজার স্মৃতির আবাস ছেড়ে;
বদল বেলায় এসে
কে যেন আজ দাগিয়ে গেছে বুকটা ফেড়ে ফেড়ে।

দিনের আলোয়
দেখবে সবে, পুঁছবে পাছে ডেকে;
তাই রাতের কালোয়
দিলাম পাড়ি খাঁ খাঁ হৃদয় ঢেকে।

করণীয়ণুকাব্য

করণীয়ণুকাব্য
::রবিউল করিম::

ক্ষমতার চোর যদি
চুরি করে পুকুরে;
হাঁক ছাড়ো ভয় নেই
চিল্লালে কুকুরে।

সুখে দুঃখে ওরা যদি
কাছে ডাকে দাদারে;
অসি ধরো ভয় নেই;
কোন গড ফাদারে।

সংসদে আল্লাহর
ঠাই যদি নাই হয়;
এ জীবন নিয়ে বাঁচা
এই দেশে আর নয়।

চাতুরীর ছল যদি
করে ওরা ক্যামেরায়;
মাত ডরো মুসলিম
এক হও কালেমায়।

বামে রামে ফের যদি
অবরোধে বাধা হয়।
আগাছা উপড়াতে
আর কোন দেরী নয়।

বাংলার মুসলিম
এক হও এক হও।
তাজা খুন ঢেলে দিয়ে
জান্নাত কিনে লও।

হয় হোক সিংহের
এক দিন জীবনে;
জান গেলে শাহাদাত,
ভয় কেন মরণে?

সাভারণুকাব্য

সাভারণুকাব্য
::রবিউল করিম::

লাভের খাতে লোভের ভবন
মৃত্যুকূপে আঁকা।
শোকের মাতম; সুখের ভূবন
মরণ মেলায় ঢাকা।

যাদের ঘামের বদৌলতে 
চলছে দেশের চাকা।
লাশের মিছিল গুনছি তাঁদের
শুনছি বুলি ফাঁকা।

হ্যান করেগা ত্যান করেগা,
সবাই পাবে টাকা।
কদিন বাদে ভুললে সবাই
পড়বে সবই ঢাকা।

কদিন বাদেই উঠবে দালান,
বাড়বে রানার টাকা।
গরীবগুড়া গ্রামের মানুষ
আসবে আবার ঢাকা।

সুতার টানে উড়বে আবার
ডলার, রিয়াল, টাকা।
আগুন, ধসে মরবে শ্রমিক
চলবে জীবন চাকা...

বামণুকাব্য


প্যাঁচালণুকাব্য

প্যাঁচালণুকাব্য
::রবিউল করিম::

মখা মিয়াঁ ওষুধ খাও,
গদি ছাইড়া পাবনা যাও।
মান বাঁচাতে যদি চাও
বোতল খাওয়া ছাইড়া দাও...

মেনন তোমার হইল কী?
পান্তাভাতে ঢালছো ঘি;
যুদ্ধাপরাধ লাইক নাকি
সাভার ট্রাজিডি !!!

BGMEর সভাপতি
আতিক জ্ঞানে শূন্য।
ভবন ধসের খবরে নাকি
দেশের ইমেজ ক্ষুণ্ণ?

এতই যদি দেশের জন্য
মায়া কাঁদাকাদি,
আগেই কেন খোঁজ নিলে না
ভেংগে পড়ে যদি?

হরতালণুকাব্য

হরতালণুকাব্য
::রবিউল করিম::

সরকারিদের যাচ্ছেতাই
বিরোধী কারও রেহাই নাই।
সহিংসতা বাড়ল ভাই
হরতাল ছাড়া গতি নাই।

পান থেকে চুন খসলেই হয়
মিছিল মিটিং আর দেরি নয়!
লাঠি সোঁটা গুলির ভয়
সকাল সাঁঝে হরতাল হয়।

পিকেটারে কেলিয়ে দাঁত,
রিক্সা পেলেও করছে কাত।
বাসচালকের মাথায় হাত,
মিলবে কী আজ পেটের ভাত?

জনগণের জান আর মাল
ভেঙ্গেচুরে হয় বেসামাল।
দুঃখে ভরা বঙ্গ ভাল
রোজ ফি রোজ হরতাল...

চলছে বেজায় হরতাল,
শেয়ার বাজার টালমাটাল।
অর্থনীতির আবুল মাল
হরতালে হন তালবেতাল।

চললে দেশে ইরাম তাল
আজ বুঝবিনা, বুঝবি কাল।
পান্তা ভাতে মিলবে ডাল
দে, ডাক দে হরতাল...

আশরাফুলণুকাব্য

আশরাফুলণুকাব্য
::রবিউল করিম::

একটা সময়,
ছিল দেশময়
আশার মূল;
আশরাফুল।

মাঝে কিছুদিন
ব্যাটে রানহীন,
খেলছিল ভুল;
আশরাফুল।

ব্যাটের শানে
ফিরল রানে,
বাঁচল কূল;
আশরাফুল।

আবারও শেষে
কুটিকুটি হেঁসে
আশার ফুল;
আশরাফুল।

মুশফিকণুকাব্য

মুশফিকণুকাব্য
::রবিউল করিম::

দলের নায়ক
রেকর্ড নায়ক,
দুই শত ঠিক
সে যে মুশফিক।

টেস্ট খেয়া পার
রান এ একাকার
আশা ভরপুর
মুশফিকুর।

বাঘে লংকানে
খেলে জানে প্রাণে
গ্লানি হলো দূর
মুশফিকুর...

সুখমাখা হাসি
হাঁসে দেশবাসী
বিজয়ের সুর
মুশফিকুর...

সময়ের ফের
খেলে টেলে ঢের
ড্রএ বিজয়ের আশা দূর
মুশফিকুর...

ভুলণুকাব্য

ভুলণুকাব্য
::রবিউল করিম::

ভুলের তলে আটকে গিয়ে সমাজ জীবন তরী
বাঁধার বাঁধন ঘাটে ঘাটে একূল ওকূল ভরি ।
ভুল ঢাকিতেই নতুন ভুলের ভুবন দিলাম খুলি,
জনে জনে দেখল- সে লাজ কী করে আজ ভুলি।

ভুল বুঝে আজ ভুলের উপর ভুল সাজিয়ে হায়
বিদ্যে বোঝাই হলেও ভুলের পরশ থেকেই যায়।
আপন ভুলের স্বীকার যে জন নিজের মুখেই করে,
লোকলজ্জা পেলেও মনে শান্তি মেলে পরে।

দেখবে যে জন নিজের চোখে নিজের ভুলের বাহার
শুধরিবে সে, বনবে জ্ঞানী, সাধন হবে তাহার।
আজকে যারা অন্য ভাইয়ের ভুলের পিছে লাগে
রোজ হাশরে আগুন তাহার মিলবে আগেভাগে।

পরের ভুলের পিছে তুমি মিছেই কেন পড়ো ?
মরার আগেই নিজের ভুলের হিসেব কষে মরো।
দিন থাকিতে দ্বীনের রশি ধরলে জীবন খানায়
দুঃখ সুখের মাঝেও মেলে শান্তি কানায় কানায়।

পত্রিকাণুকাব্য

পত্রিকাণুকাব্য
:: রবিউল করিম ::

সত্য যখন অঙ্ক কষে
চাপার জোরে মিথ্যা হয়।
মিথ্যা তখন প্রচার বলে
সত্য বলে গণ্য হয়।

প্রচার যন্ত্র কারচুপিতে
সিদ্ধ হস্ত হলেই তয়,
সিংহভাগের মনের কথার
মনের ঘরেই কবর হয়।

নামটি হলেও প্রথম আলো
আঁধার যে তার নিচেই রয়;
কথার মারে-প্যাঁচে ফেলে
সাঁচার সাথে মিথ্যা কয়।

কালের কন্ঠ আকন্ঠ তার
চামচামিতে ভরা;
বামের রামের ভুত ধরেছে
সত্যি কথার খরা।

সমকালের সম্পাদকের
একচোখা বাম দৃষ্টি;
বকধার্মিক সেজে
পাতায় করছে অনাসৃষ্টি।

নাক ডুবিয়ে পড়ছে লোকে
গিলছে এদের কথা;
ভাবছে বসে কীসব
দেশে ঘটছে যথাতথা।

ডানে বামে সবাই কী বাম
মুগ্ধ লেনিন মন্ত্রে?
প্রচার যেন দেশটিবাঁধা
ওদের সমাজতন্ত্রে।

দেশের মানুষ নয়তো আবাল
নয়তো বামের চ্যালা।
মিছিল দিয়ে বামরা বানায়
সাধারণের মেলা।

আমজনতা আলেম মিলে
মিছিল করলে বাহির;
এরাই জামাত শিবির বলে
খবর করে জাহির।

রসূল নিয়ে গালি দিলেও
টনক নড়ায় না।
প্রতিবাদে দেশ ফুঁসলেও
খবর ছাপায় না।

নাস্তিক এক মরলে থাবা
শহীদ লেখা সারা।
এগার মুমিন শহীদ হলেও
'নিহত' লেখে তারা।

একচোখা এক চোখটি কানা
বামের পত্রপাতা;
দাজ্জালীয় প্রতারণায়
ফুটায় 'ধর্ম ছাতা'।

সারা বছর বাশটি মারে
মুসলমানের পাছায়;
কথা বলে এমন যেন
ইসলাম এরাই বাঁচায়।

সবচে বড় প্রতারণা
দেখতে যদি চাও;
জেনে বুঝে চোখটি খুলে
বামের পাতায় যাও।

দেখবে সেথায় মিথ্যা সাঁচার
আজীব কারিগরি;
বামের খুঁটি করতে পাকা
'কলাম' জারিজুরি।

থাবাণুকাব্য

থাবাণুকাব্য
::রবিউল করিম::

কী বলো ভাই, কও কিয়া
থাবা বাবায় মর গিয়া।
আসিফ এবার ডর গিয়া,
পুলিশ কা গার্ড লে লিয়া।

ঈমান আমল ছোড় দিয়া,
ব্লগ ব্লগরে ভর গিয়া।
কুফরির মোত পে লিয়া,
মুক্তমনে লেখ লিয়া।

ওদের 'ব্যা ব্যা'য় কান দিয়া
কী লভিবে মরমিয়া?
জান যদি হয় দরদিয়া
নারীর মরণ মর গিয়া।

ফাঁসীর দাবীর পোজ দিয়া,
আমজনতা ডাক লিয়া।
বামের সাপে ফোঁস দিয়া,
দ্বীনের উপর ঝাঁপ দিয়া।

মর গিয়া, এক মর গিয়া
আওর উনহুনে ডর গিয়া।
আজরাইলে দেখ গিয়া,
গর্দানে এক পোঁছ দিয়া।

জো জানাজা পড় লিয়া,
উও মুনাফিক্ব হো গিয়া।
জানের ভয়ে ভড়কিয়া,
ঈমান খানি বেচ দিয়া...